মঙ্গলবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৩, ০৭:৫৮ অপরাহ্ন
বিডি নিউজ আই, নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) সন্ধ্যা সোয়া ৬টার নারায়ণগঞ্জের ডন চেম্বার এলাকার মেডিস্টার হসপিটাল এন্ড রেনেসাঁ ল্যাবে অভিযান চালিয়েছে জেলা প্রশাসন।
এ সময় কর্তৃপক্ষ হাসপাতালটির কোনো অনুমোদন দেখাতে পারেনি। ফলে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রেজওয়ানা চৌধুরীর নেতৃত্বে হাসপাতালটিকে নগদ দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। অভিযানে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। জানা গেছে, মেডিস্টার হসপিটাল এন্ড রেনেসাঁ ল্যাবটি দুই বছরের কিছু বেশি সময় ধরে চলছে। তবে হাসপাতালটি পলিচালনার কোনো অনুমোদন নেই। এছাড়াও হাসপাতালটিতে ডিউটি ডাক্তার সব সময় উপস্থিত না থাকার সত্যতা পান ভ্রাম্যমাণ আদালত। পরে সকল বিষয় আমলে নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত প্রতিষ্ঠানটিকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করেন। পাশাপাশি তাদের তিন দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট সকল কাগজপত্র দেখানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। নির্দেশিত সময়ের মধ্যে অনুমোদনসহ সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র না দেখাতে পারলে হাসপাতালটি সিলগালা করে দেওয় হবে বলে জানানো হয় কর্তৃপক্ষকে। তবে অভিযান শেষে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. তোফাজ্জল হোসেন বলেন, সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক সারাদেশের ন্যায় নারায়ণগঞ্জে অবৈধ ক্লিনিক হাসপাতাল বন্ধে কাজ করছে জেলা প্রশাসন। এরই ধারাবাহিকতায় আজ মেডিস্টার হসপিটাল এন্ড রেনেসাঁ ল্যাবে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রেজওয়ানা চৌধুরীর নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এ সময় দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
প্রসঙ্গত, টনসিলের রোগ নিয়ে গত মঙ্গলবার (১৪ জুন) অপারেশনের জন্য নারায়ণগঞ্জের নবাব সলিমুল্লাহ রোডের ডনচেম্বার এলাকার মেডিস্টার হসপিটাল এন্ড রেনেসাঁ ল্যাবে ভর্তি হন রোজিনা আক্তার (৩০) নামে এক নারী। ওই দিন সন্ধ্যায় হাসপাতালটিতে রোগীর অস্ত্রোপচার হয়। এরপর রাত ১০টার কাছাকাছি সময়ে রোগীর শরীর খারাপ হতে থাকে। এ সময় রোগীর স্বজনরা বারবার হাসপাতালে দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক ও প্র্যাকটিস নার্সদের কাছে সাহায্য চাইলেও তারা এগিয়ে আসেননি বলে রোগীর একাধিক স্বজন অভিযোগ করেন। পরে ওই দিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে রোজিনার নাকে মুখে রক্তক্ষরণের পর তার মৃত্যু হয়। গলায় টনসিলের সমস্যায় তার মৃত্যু হলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শ্বাসক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছে বলে মৃত্যুসনদ দেয়।
রোগী মারা যাওয়ার পর রোগীর স্বজনরা উত্তেজিত হলে হাসপাতালের নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরীন সুলতানা নদী ও স্থানীয় ১৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শওকত হাসেম শকুর বড় ভাই সাবেক কমিশনার মেহাব্বত আজাহার তাদের নিয়ে সমঝোতায় আসেন। এ সময় ওই হাসপাতালের একটি প্যাডে স্বাক্ষর নিয়ে চার লাখ টাকায় রোগীর স্বজনদের চাপে ফেলে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়।
আপনার মন্তব্য প্রদান করুন...