বিডি নিউজ আই, নারায়ণগঞ্জ: নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেছেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে সারা বিশ্বে যেই পরিস্থিতি, তাতে সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটা স্বাভাবিক। আমরা মনে করছি সাময়িক ভাবে এই সংকট মোকাবেলা করার জন্য এই রেশনিংটাকে মেনে নিয়ে আমাদের উৎপাদন ব্যবস্থাটা সাজানো উচিৎ। আগামীতে যাতে আমাদের বড় কোন সংকটে পরতে না হয় তাই, এই সাময়িক সংকটটাকে আমাদের মেনে নেয়া উচিৎ। বর্তমানে সোলার সিস্টেমের মাধ্যমে আমরা যে বিদুৎ উদপাদন করে থাকি সেটার উপর সরকার ট্যাক্স নিচ্ছে। আমার মনে হয় বর্তমান প্রেক্ষাপটে ৬ মাস বা এক বছরের জন্যএর উপর থেকে ট্যাক্স উঠিয়ে নেয়া উচিৎ।
রোববার (১৪ আগস্ট) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) আয়োজিত সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি।
মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ডিজেল-অকটেনের অস্বাভাবিক এই মুল্য বৃদ্ধি আমাদের কোন ভাবেই এডজাস্টেবল না। ডিজেলটা তো সাধারণ মানুষের নিত্য দিনের প্রয়োজনীয় একটা জিনিস, আমি দাবি জানচ্ছি এই দামটাকে যাতে ৩ মাস অন্তর অন্তর সমন্বয় করা হয়। আমার কাছে গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন যায়গা থেকে গ্যাসের রিপোর্ট আসে। আমি কিছুদিন আগে বলেছিলাম যে, বিদ্যুতের ঘাটতিটা আমরা এডজাস্ট করে নিতে পারবো তবে; ইন্ডাস্ট্রির জন্য গ্যাসের কোন বিকল্প না। প্রতিদিন আমরা যে পরিমানে গ্যাস পাচ্ছি তাতে কিন্তু আমাদের উৎপাদনে বিশাল ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। যেখানে ১৫পার্সেন্ট দেয়া কথা সেখা পয়েন্ট ২ পার্সেন্ট পাওয়া যাচ্ছে। যা সর্বচ্চ পয়েন্ট ৫ পর্যন্ত উঠছে। আগামী দিনে আমরা যে ডেস্টিনেশনে যাবো সেখানে কিন্তু আমাদের হোচট খেতে হচ্ছে।
মোহাম্মদ হাতেম আরও বলেন, আপনারা বলছেন ডলার সংকট বা রিজার্ভ কম হওয়ার কারনে এলএনজি ইমপোর্ট করছেন না। আমি আপনাদের একটা বিনিত অনুরোধ করবো যে, আপনারা রিজার্ভ থেকে পাঁচ বিলিয়ন ডলার লোন নেন ছয় মাসের জন্য। ছয় মাস পর আমি আপনাদেরকে নিশ্চিত করে বলতে পারি আমাদের রপ্তানি থেকে অন্তত তিন গুণ রিজার্ভে ফেরত দেয়া যাবে। কারন আমাদের প্রতিমাসে রপ্তানি হয় সাড়ে তিন বিলিয়ন ডলার। সেক্ষেত্রে আমাদের ছয় মাসে ২১ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি হবে। সেখান থেকে আমাদের ৭ কিনবা ৮ বিলিয়ন ডলার আমদানি ব্যায় পরিশোধ করতে হয়, আর বাকি ১৪ কিনবা ১৫ বিলিয়ন ডলার কিন্তু আমাদের রিজার্ভে থাকছে।
তিনি বলেন, অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলছি, আমাদের আমদানি-রপ্তানির প্রধান বাধা হচ্ছে এনবিআর ও কাস্টমস। আমাকে প্রায় প্রতি দিনই চট্টগ্রাম কাস্টমস, ঢাকা কাস্টমস ও উত্তর-দক্ষিণের কাস্টমসের কমিশনারকে ফোন দিয়ে আমার ব্যবসায়ীদের উদ্ধার করতে হয়। নানা অজুহাতে এসব ব্যবসায়ীদের গাড়ি ও পণ্য আটকে রাখা হচ্ছে। অপকর্ম যারা করেন তাদের আপনারা ধরেন। দৃষ্টান্তমূলক সাজা দেন। আমাদের আপত্তি নেই। বন্ড অপব্যবহারকারীদের সাজা দিয়ে সারাজীবনের জন্য বন্ধ করে দেন তাদের ব্যবসা, আপত্তি নেই। কিন্তু এই জ্বালাতন আমাদের ওপর কেন হবে?
এ সময় সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি মো. শফিউল ইসলাম।
আপনার মন্তব্য প্রদান করুন...