নারায়ণগঞ্জসহ দেশের সাত জেলায় এক সপ্তাহের কড়া বিধিনিষেধের ঘোষণা দিয়েছে সরকার। এ বিষয়ে সোমবার (২১ জুন) সন্ধ্যা পৌনে সাতটায় সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ। এ সময় জেলা প্রশাসক বলেন, কোভিড সংক্রমণ রোধ করতে সরকারি এই বিধিনিষেধ চলাকালীন জরুরি পরিষেবা ছাড়া সবকিছু বন্ধ থাকবে। গণপরিবহন বন্ধসহ সাধারণ মানুষের চলাচলও সীমিত ঘোষণা করা হয়েছে। তবে জেলার অর্থনৈতিক অঞ্চল যেমন, বিসিক শিল্পনগরী ও ইপিজেডে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কারখানা খোলা রাখা যাবে বলে জানিয়েছেন ডিসি।
ব্রিফিংয়ের পূর্বে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সম্মেলন কক্ষে সভা চলছিল। ওই সভায় অনলাইনে সংযুক্ত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব সত্যজিৎ কর্মকার। আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম, জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইমতিয়াজ, সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল আমিন, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মনিরুজ্জামান বকাউল, অন্যান্য প্রশাসনিক কমকর্তা ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিগণ। এই সভায় সরকারি বিধিনিষেধ কার্যকরের বিষয়ে আলোচনার মাধ্যমে কিছু সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, ‘ঘনবসতিপূর্ণ নারায়ণগঞ্জে প্রায় ৭০ লাখ লোকের বসবাস। জেলার সাধারণ মানুষকে করোনা ভাইরাসের ডেল্টা ভেরিয়েন্ট থেকে রক্ষা করার জন্য সরকারি সিদ্ধান্তে মঙ্গলবার ভোর ৬টা থেকে ৩০ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত সর্বাত্মক লকডাউন চলবে। এই সময়ে সবরকম গণপরিবহণ এবং দোকান-পাট বন্ধ থাকবে। সাধারণ চলাচল সীমিত থাকবে। তবে জরুরি পরিষেবা যেমন ওষুধ, জরুরি খাদ্য, কৃষি ও শিল্প উপকরণ পরিবহণ লকডাউনের আওতার বাইরে থাকবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘খুবই জরুরি কোনো এলাকায় খাবার হোটেল খোলা রাখলেও তা পার্সেলের ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়া কাঁচাবাজার ও মুদি দোকান খোলা থাকবে। নারায়ণগঞ্জ অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ অঞ্চল এবং দেশের খাদ্য সরবরাহের কার্যক্রমটি এখানে পরিচালিত হয়ে থাকে। এজন্যে আমরা অর্থনৈতিক ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল কর্মকান্ডগুলো অভ্যন্তরীণভাবে সীমিত আকারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।’
পোশাক কারখানা খোলা রাখার বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিসি বলেন, ‘আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে কোনোরকম চলাচল ছাড়া শিল্প কারখানাগুলো খোলা রাখার অনুমতি দিয়েছি। আমরা কোনো পোশাক শ্রমিকদের কোনোরকম যাতায়াত করতে দিবো না। তাদেরকে কর্মস্থলে রেখে কিংবা হেঁটে যাওয়া যায় বা শহরের কাছে থেকে তারা কাজ করবেন সেটিই আমরা নির্দেশনা দিয়েছি। আমরা এবার লকডাউনে যাচ্ছি নারায়ণগঞ্জকে রক্ষা করার জন্যে।’
সরকারি বিধিনিষেধ কার্যকরের জন্য জেলাজুড়ে ১৮টি মোবাইল টিম কাজ করবে বলে জানান মোস্তাইন বিল্লাহ। প্রতি টিমে একজন ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ সদস্যরা থাকবেন।
আপনার মন্তব্য প্রদান করুন...