• সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১২:৪৮ পূর্বাহ্ন
  • |
  • Bangla Converter
  • |
শিরোনাম :

কবি তাহমিনা তানি’র তিনটি কবিতা

বিডিনিউজ আই ডেস্ক : / ৫২৩ বার পঠিত
প্রকাশিত সময় : সোমবার, ৭ জুন, ২০২১
কবি তাহমিনা তানি

মুখোশের খোলস

সবার কাছে না-ই বা হলাম খুব প্রিয়,
স্পষ্ট কথা বিষের মতোই অপ্রিয়।
অপ্রিয় হোক সত্য বলতে দ্বিধা নেই,
সময় হলে মিথ্যেটা ঠিক হারায় খেই।

মুখোশ পরে না-ই বা হলাম খুব ভালো,
স্বার্থের মোহ দিক নিভিয়ে সব আলো।
মিথ্যার যদিও এসেছে জোয়ার তাতে কি?
সত্যের মশাল একদিন দেখো জ্বলবে ঠিক-ই।

লোকদেখানো ভন্ডামী আর না-ই থাকুক
ধৈর্য্য সদাই কষ্টগুলোর সঙ্গে বাঁচুক।
কি-ই আসে যায় না-ই বা থাকুক রাজত্ব,
ক্ষমতা একদিন ঠিক হারাবে স্থায়ীত্ব।

পরচর্চায় জীবন না হয় না-ই কাটুক।
পশুত্ব আর মুনুষ্যত্বের তফাৎ থাকুক।
মনুষ্য নামের সত্ত্বাকে জাগিয়ে তুলে,
পশুত্ব আমূল নিপাত যাক মনুষ্যত্বের বলে।

সত্যরূপী মিথ্যের পথে না-ই চলি,
লোভ- হিংসার অনলে আর না-ই জ্বলি।
লোকঠকিয়ে নাম না কিনি স্বার্থপর,
দিনফুরোলে ঠিকানা সবার ঐ কবর।।

অসমীকরণ

জীবন মানে জীবন্ত সমঝোতা
ছবির মত হয়না অবিকল,
বেঁচে থাকার ব্যর্থ প্রয়াস জুড়ে
সময় মিছে ফুঁটায় শতদল।

হাজার ক্ষতের সাক্ষী হয়ে থাকি
শোধ করে যাই বেঁচে থাকার ঋণ,
দেনা পাওনার হিসেব রেখেই বাকি
অতলান্তে পালাবো একদিন।

নিরুদ্দেশে ঠিক হারিয়ে যাবো
দিকহারানো ঐ পথিকের ন্যায়,
নিমগ্নতায় বিলীন হতে হয়,
ধার করে কেনা বাসি মৌনতায়।

হয়তো সেদিন অস্তিত্বহীন হবো
ক্রম ক্ষয়িষ্ণু ভালোবাসার মত,
ফেলে যাওয়া ইতিহাস সাক্ষি দিবে
অবশিষ্ট প্রবঞ্চনা আছে যত।

মহাকালের আঁকাবাঁকা মেঠোপথের ধারে
সমাধিস্থ করি স্বপ্নের কুঁড়েঘর,
সহজকে অনবরত সহজ ভেবে চলি
বিয়োগান্তের মিছিলে সহজ হয়েছে বর্বর।

 আমি মধ্যবিত্ত

আমি মধ্যবিত্ত,
তাই ‘হোম কেয়ারেন্টাইন’ শব্দটা আমার কাছে যন্ত্রনাময়,

আমি মধ্যবিত্ত,
তাই আমার সাথে রাস্তার কুকুর কিংবা তৃষ্ণার্ত কাকটার কোন ভেদাভেদ নাই।

আমি মধ্যবিত্ত,
তাই জীবনের মৌলিক চাহিদাগুলো পূরন না হলেও আক্ষেপ করতে নেই,

আমি মধ্যবিত্ত,
তাই শতভাগ বিষাক্ত বাতাসেও আমাকে অক্সিজেন খুঁজতে হয়।

আমি মধ্যবিত্ত,
তাই মগজের হিসেব-নিকেষটা কখনও বন্ধ হতে নেই,

আমি মধ্যবিত্ত,
তাই লকডাউনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে ভাবার সুযোগ নেই।

আমি মধ্যবিত্ত,
তাই পুলিশ কিংবা প্রশাসনের লাঠিচার্জে ভয় করতে নেই,

আমি মধ্যবিত্ত,
তাই পৃথিবীর সমস্ত হুঁশিয়ারী কখনও ভেদ করেনা আমার কর্ণকুহর,

আমি মধ্যবিত্ত,
তাই কারো উপকারী দান গ্রহণ করা মৃত্যু যন্ত্রনার চেয়েও কষ্টকর।

আমি মধ্যবিত্ত,
তাই আমিসহ আরো পাঁচজন মানুষের পেটের ক্ষুধা আমাকেই মেটাতে হয়,

আমি মধ্যবিত্ত
তাই জন্মের সকল ঋন শোধ করা আমার একার দায়।

আমি মধ্যবিত্ত,
তাই প্রিয় মানুষের কান্নাগুলো আমার কাছে ভাইরাসের চেয়েও বিষাক্ত মনে হয়,

আমি মধ্যবিত্ত,
তাই জীবন সংগ্রামে পাহাড় সমান বাধাকে টপকে যেতে হয়,

আমি মধ্যবিত্ত,
তাই যমদূতকে সাথে নিয়েই মধ্যবিত্ত হবার প্রায়শচিত্ত করতে বেঁচে থাকতে হয়।

আপনার মন্তব্য প্রদান করুন...


এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..