বিশেষ সংবাদদাতা: প্রস্তাবিত অর্থবছরে প্রান্তিক পর্যায়ের অসহায় মানুষের সহায়তায় বাড়তি নজর দেওয়ার অংশ হিসেবে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর খাতে বরাদ্দ বাড়িয়ে এক লাখ সাত হাজার ৬১৪ কোটি টাকা করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। উক্ত বরাদ্দ থেকে ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন “বাংলাদেশ ন্যাশনাল সার্ভিস একতা কল্যাণ পরিষদ” এর সভাপতি মোঃ মোস্তফা আল ইহযায।
তিনি বলেন এই খাতে প্রান্তিক মানুষের কথা বিবেচনা করে প্রস্তাবিত বরাদ্দ চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের বরাদ্দের তুলনায় ১১ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা বেশি রাখা হয়ছে। ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবে অর্থমন্ত্রী করোনাভাইরাসের প্রভাব মোকাবিলায় দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর কর্মসূচির আওতা আরও বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন।
করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রায় সব চাকরির পরীক্ষাই আটকে গেছে। সরকারি চাকরির ৩ লাখ ৬৯ হাজার ৪৫১টি পদ শূন্য আছে বলে ২০২০ সালের ১৯ নভেম্বরে জাতীয় সংসদে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী মো. ফরহাদ হোসেন। আমাদের মাঝে অনেকেই আছেন, যাদের চাকরিতে প্রবেশের বয়স আর বেশিদিন নেই, অনেকের চাকরির বয়স শেষ হয়ে গিয়েছে। ন্যাশাল সার্ভিসে কাজ করতে গিয়ে প্রায় ২বছর ৩মাস চলে যায় এরপর করোনা মহামারির শুরুর দিকে আমাদের প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর আমাদেরকে প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির আশ্বাস দিলেও তা বৃদ্ধি না করায় আমরা কর্মহীণ হয়ে পড়ি, মহামারীতে নতুন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না হওয়ার কারণে আমরা কর্মসংস্থান হারিয়ে অত্যন্ত অমানবিক জীবন যাপন করছি এমন পরিস্থিতিতে স্থায়ী কর্মসংস্থান সৃষ্টি অতন্ত্য জরুরি হয়ে পড়েছে। বর্তমানে প্রায় ৭৪ দশমিক ৫ শতাংশ তরুণরাই বেকারত্ব নিয়ে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠায় আছে এর কারণ হচ্ছে, ভবিষ্যৎ কর্মসংস্থান নিয়ে অনিশ্চয়তা। আমরা অনিশ্চয়তা থেকে বেরিয়ে আসতে চাই।
আমরা কাজ করতে চাই, আয় করতে চাই, জীবনে গুরে দাঁড়াতে চাই। কাজ না পাওয়া থেকে যে হতাশা তৈরি হবে তা আমাদের সৃজনশীলতা, কর্মউদ্যোগ, ভালো কিছু করার ইচ্ছা, সমাজের পাশে দাঁড়ানোর ইচ্ছা, প্রতিভা, সততা সব নষ্ট করে দেবে। ন্যাশনাল সার্ভিসে দেশব্যাপী ৪৭টি জেলায় প্রায় ২লাখ ৪০ হাজারের অধিক কর্মী রয়েছে, এই ব্যাপক সংখ্যক জনশক্তিকে যদি কাজ দিতে না পারা যায় তখন এই শক্তি পরিণত হবে আপদে। হতাশা থেকেই যুব শক্তি হয়ে যেতে পারে পথচ্যুত, মাদকাসক্ত, রাষ্ট্র ও সমাজের বোঝা ।
তিনি আরও বলেন করোনায় নারী নেতৃত্বাধীন পরিবারের আয় কমেছে ৮০ শতাংশ অধিক। মে মাসে পরিচালিত বেসরকারি একটি সংস্থার গবেষণায় বলা হয়, মহামারিতে নারীপ্রধান পরিবারের ৫৭ শতাংশেরই কোনো উপার্জন নেই। এমনকি করোনায় নারীদের চাকরি হারানোর ঝুঁকি বেড়েছে বলে সতর্ক করে দিয়েছে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা-আইএলও। আমাদের ন্যাশনাল সার্ভিসে প্রায় ৫৫ শতাংশ নারী সদস্য যা সরকারের যে কোনো প্রকল্পের চেয়ে বেশি। তাই বর্তমানে যুব ও যুব নারীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে হতাশা থেকে কাজের পরিবেশ তৈরি করতে প্রস্তুতি বাজেট থেকে বরাদ্দ প্রদানে করে ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মীদের স্থায়ী কর্মসংস্থা প্রদানের জোর দাবী জানান।
আপনার মন্তব্য প্রদান করুন...