• সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০১:১৩ পূর্বাহ্ন
  • |
  • Bangla Converter
  • |
শিরোনাম :

দিনাজপুর লিচুর বাম্পার ফলন

বিডিনিউজ আই ডেস্ক : / ৫৭৭ বার পঠিত
প্রকাশিত সময় : বুধবার, ২৬ মে, ২০২১

দিনাজপুর জেলায় লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। চলতি মৌসুমে এই জেলায় মাদ্রাজী, বোম্বাই জাতের লিচুর পর এবার নজর কাড়ছে চায়না টু, চায়না থ্রি এবং বেদেনা হাড়িয়া জাতের লিচু। তবে লিচুর মৌসুমের শেষের দিকে গাছে-গাছে লাল শোভা পাওয়া এই জাতের লিচুগুলোর দাম আরও একটু বেশি হবে বলে বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা জানায়।
দিনাজপুর কৃষি অধিদপ্তরের গবেষণা বিভাগের সহকারী পরিচালক মো. আশরাফুজ্জামান জানান, জেলার ১৩টি উপজেলাতেই এবার লিচুর বাম্পার উৎপাদন অর্জিত হয়েছে। চলতি বছর ৬ হাজার ২৬০ হেক্টর জমিতে লিচুর বাগান ও বাড়ির আশপাশ অর্জিত গাছে লিচুর ফলন হওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। লক্ষ্যমাত্রার অতিরিক্ত ২৫০ হেক্টর লিচু চাষ হয়ে এবার ৬ হাজার ৫১০ হেক্টর লিচু বাগান ও বাড়ির আশপাশ লিচু গাছে বাম্পার ফলন হয়েছে। বছরের এই মধু মাস বলে পরিচিতি জেষ্ঠ্য মাসের শুরু থেকে আষাঢ় মাসের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত বিভিন্ন ভেরাইটির লিচু দিনাজপুর জেলার ১৩টি উপজেলাতেই বাগানে ও বাড়ির আশপাশ গাছে লিচুর ফলন হয়। লিচুর ফলন ঠিক রাখতে পরিচর্যা ও লিচুর গাছে নেট দিয়ে ঢেকে রেখে লিচুর মান ঠিক রাখতে বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছে।
দিনাজপুর সদর উপজেলার মাসিমপুর গ্রামের লিচু বাগানের মালিক রবিউল আউয়াল জানান, এবারে দিনাজপুরের সুনামধন্য বেদেনা লিচুর ফলন অনেকটাই ভালো হয়েছে। অর্জিত ও উৎপাদিত বেদানা লিচু বাগান থেকেই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। আর বাছাই করা প্রতি হাজার বেদানা লিচু ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা শ’ মুল্যে এই লিচু বিক্রি চলছে। জেলার বাইরে থেকে পাইকার ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ব্যাক্তিরা দিনাজপুর থেকে বাগানে লিচুর গাছ থেকেই লিচু সংগ্রহ করে যানবাহন যোগে নিয়ে যাচ্ছে।
চলমান মহামারি করোনা ও প্রকৃতিক দূর্যোগের কারণে প্রথমে লিচু নিয়ে বাগান মালিক এবং ব্যবসায়ীরা শংকায় থাকলেও এখন আর সে শংকা নেই। অন্যান্য দেশী ভেরাইটি লিচু মাদ্রাজি, বোম্বাই ও অন্যান্য লিচু ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রয়েছে। এসব লিচু প্রতি শ’ ১০০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দিনাজপুর শহরে গোর-এ- শহীদ বড় ময়দানে করোনাকালীন সময়ের জন্য লিচুর পাইকারী ও খুচরা বাজার বসানো হয়েছে। জেলা প্রশাসক খালেদ মোহাম্মদ জাকী ২৫ মে এই লিচু বাজার উদ্বোধন করেছেন। এখান থেকে প্রতিদিন প্রায় ২০/২৫টি ট্রাক বিভিন্ন জায়গায় লিচু নিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া ছোট মিনি ট্রাক, পিক-আপ ও বিভিন্ন যানবাহনেও লিচু পরিবহনের কাজ চলছে।
সরকারি সহযোগিতা এবং উপজেলা প্রশাসনের নজরদারীর মধ্যে দিয়ে সড়ক পরিবহনের মাধ্যমে এসব লিচু যাচ্ছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। চাষ করা লিচুর দাম পেয়ে একদিকে যেমন বাগান মালিকরা খুশি অপরদিকে খুশি ব্যবসায়ীরা।
দিনাজপুর বিরল উপজেলার এনায়েতপুর গ্রামের লিচু বাগান মালিক রায়হান কবীর ও ধর্মজান গ্রামের পোহাতু বর্মন জানান, তাদের বাগানে এবার চায়না থ্রি লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। এই জাতের লিচু জেষ্ঠ্য মাসের ২০ তারিখের পর থেকে বাজারে আসে। লিচু সংরক্ষণের জন্য তারা পরিচর্যা ও নেট দিয়ে ঢেকে রেখে নিয়মিত পাহাহা দিচ্ছেন। কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে লিচুর ভালো মুল্য পাবে বলে তারা আশাবাদ ব্যাক্ত করেন।
মুন্সীগঞ্জ থেকে আগত লিচু ব্যবসায়ী জয়নাল আবেদিন জানান, তিনি এই জেলার চিরিরবন্দর কারেন্টহাট এলাকায় ২ একর ৫০ শতক জমির ২টি লিচুর বাগান (লিচুর ফল) ২ বছরের জন্য ৫ লাখ টাকা মূল্যে ক্রয় করেছেন। এবছর ওই বাগানে চায়না থ্রি ও মাদ্রাজি লিচু রয়েছে। মাদ্রাজি লিচু পেকে যাওয়ায় তিনি ওই লিচু পেড়েছেন। এখন চায়না থ্রি মাসের শেষ নাগাদ নামাবেন বলে জানান। যদি কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হয় তাহলে তিনি লিচুর ভালোভাবেই বিক্রি করে লাভবান হবে বলে জানান।
নিয়মিত গাছ থেকে লিচু নামানো হলে এবং আবহাওয়া ও দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে আগামী ১ মাসের মধ্যে সম্পূর্ণভাবে চাষ হওয়ার এসব লিচু বাজারে উঠবে বলে স্থানীয় লিচু বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।(বাসস)

আপনার মন্তব্য প্রদান করুন...


এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..