নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়ায় অবস্থিত মার্ক টাওয়ারে অভিযান চালিয়েছেন কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কর্মকর্তাদের একটি দল। রোববার (৩০ মে) বেলা ১২টার দিকে দলটি মার্কেটে আসেন। প্রায় দুই ঘন্টা তারা মার্কেটে অবস্থান করেন। এ সময় মার্কেটের ব্যবসায়ী ও দোকান মালিক সমিতির লোকজনের সাথে কথা বলেন তারা।
নারায়ণগঞ্জের চারটি মার্কেটের ১৭৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাত্র ৮টি প্রতিষ্ঠান নিয়মিত ভ্যাট প্রদান করছে। সরকারি বিধান থাকলেও বাকি ১৬৬টি প্রতিষ্ঠান কোনো প্রকার ভ্যাট প্রদান করে না। মার্কেট চারটি হলো: চাষাঢ়া এলাকায় অবস্থিত মার্ক টাওয়ার, সমবায় নিউ মার্কেট, সায়াম প্লাজা, আল হাকিম (পপুলার) সেন্টার। ভ্যাট গোয়েন্দাদের জরিপে পাওয়া এমন তথ্যের ভিত্তিতে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর শহরের মার্ক টাওয়ারে অভিযান চালায় ভ্যাট কর্মকর্তাদের দলটি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরিদর্শনে আসা ভ্যাট কর্মকর্তাদের দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তা গণমাধ্যমে কথা বলতে রাজি হননি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযানে আসা এক কর্মকর্তা বলেন, শহরের বিভিন্ন মার্কেটের ব্যবসায়ীরা পূর্বে প্যাকেজ আকারে ভ্যাট দিতেন। তবে দুই বছর যাবৎ প্যাকেজ ভ্যাটের প্রক্রিয়াটি বন্ধ করেছে সরকার। এই বিষয়টি জানার পর থেকে অনেক ব্যবসায়ী আর ভ্যাট দিচ্ছেন না। এমনকি অনেকেই ভ্যাট নিবন্ধন করেননি। এই বিষয়ে এক গোয়েন্দা জরিপও হয়েছে। এই সংক্রান্ত বিষয় জানতে এবং কোন কোন ব্যবসায়ীর ভ্যাট নিবন্ধন রয়েছে তা জানতে এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে। ভ্যাট কর্মকর্তাদের এই দলে চারজন সুপার, কয়েকজন পরিদর্শক ও উপপরিদর্শক ছিলেন বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।
যদি ভ্যাট কর্মকর্তাদের জরিপ, ভ্যাট প্রদানের নতুন প্রক্রিয়া ও বিনা নোটিশে মার্কেটে অভিযান পরিচালনার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মার্কেটের ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, হঠাৎ ভ্যাট কর্মকর্তাদের এমন অভিযানে তারা অপ্রস্তুত হয়ে পড়েন। তাদের কাছে বিভিন্ন তথ্য জানতে চাওয়া হয়। তাদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন বলেও অভিযোগ ব্যবসায়ীদের। পরে মার্কেট কমিটির লোকজনকে খবর দেওয়া হলে তারা ভ্যাট কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনায় বসেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মার্ক টাওয়ারের দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. তানভীর বলেন, এক সময়ে তারা দোকান প্রতি ভ্যাট দিয়েছেন। তবে গত কয়েক বছর যাবৎ একাধিক দোকান মিলে প্যাকেজ আকারে বাৎসরিক ভ্যাট প্রদান করে আসছেন। ২০১৯ সাল পর্যন্ত তারা ভ্যাট প্রদান করেছেন। ভ্যাট প্রদানের চালানও তাদের কাছে রয়েছে। তবে গত বছর কোভিড মহামারীর কারণে তারা অনেকেই ভ্যাট প্রদান করতে পারেননি। তবে এ বিষয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে দোকান মালিক সমিতির নেতাদের মধ্যস্থতায় সরকারের পক্ষ থেকেও শিথিলতা ছিল।
তানভীর আরও বলেন, ‘ভ্যাট কর্মকর্তারা তাদের নতুন প্রক্রিয়ার কথা আমাদের জানাননি। এইভাবে অভিযান কিংবা গোপন জরিপ না চালিয়ে চেম্বার অব কমার্স, জেলা দোকান মালিক সমিতিসহ ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সাথে গোলটেবিল আলোচনা করে একটি সিদ্ধান্তে আসা যেত। ব্যবসায়ীদের প্রতি সরকারের সুনজর রয়েছে। তবে ভ্যাট কর্মকর্তারা নতুন নিয়ম অনুযায়ী টিন সার্টিফিকেট পাশাপাশি বিন সার্টিফিকেট করে বাৎসরিকের জায়গা মাসিক ভ্যাট প্রদান করলে ব্যবসায়ীরা পড়বেন মুশকিলে। এসব সমস্যা সমাধানের জন্যই আমরা তাদের আলোচনার আহ্বান জানিয়েছি। আমরা তাদের ইতিবাচক সাড়া পাবো বলেই মনে করি।’
আপনার মন্তব্য প্রদান করুন...