বিডি নিউজ আই, নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জে সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এক শিক্ষিকাকে ইভটিজিং ও মানসিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) ফতুল্লা মডেল থানায় অভিযোগ করেছেন শহরের পশ্চিম দেওভোগ এলাকায় অবস্থিত বিদ্যানিকেতন হাই স্কুলের ওই শিক্ষিকা।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বুধবার (১৫ জুন) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১০ দফা কর্ম পরিকল্পনা নিয়ে সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে দিনব্যাপী কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালায় বিদ্যানিকেতনের একজন পুরুষ এবং একজন নারী শিক্ষিকা অংশ নেন। একপর্যায়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু তালেব ওই নারী শিক্ষিকার পাশের চেয়ারে বসে নানা রকম কুপ্রস্তাব দেন।
তিনি তার অফিস কক্ষে যাওয়ার জন্য প্রলোভন দেখান এবং ৪০ ঊর্ধ্ব এক ব্যক্তিকে দেখিয়ে বলেন তাকে বিয়ে করার জন্য। একই সঙ্গে ওই নারী শিক্ষিকার দুপুরের খাবার পিয়নের মাধ্যমে তার অফিস কক্ষে নিয়ে যান এবং সেখানে যাওয়ার জন্য তাকে বলেন। পরে ওই নারী শিক্ষিকা ক্ষুব্ধ হয়ে অনুষ্ঠান শেষ না করেই চলে আসেন।
বৃহস্পতিবার বিষয়টি ওই নারী শিক্ষিকা বিদ্যানিকেতন হাই স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানালে তার সহকর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে হয়ে ওঠেন। পরে স্কুল কর্তৃপক্ষ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিফাত ফেরদৌস, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক তোফাজ্জল হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান এবং জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজকে জানালে তারা আবু তালেবের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।
এ বিষয়ে বিদ্যানিকেতন হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক উত্তম কুমার সাহা বলেন, ‘একজন নারী শিক্ষিকাকে এভাবে হয়রানি ও অপমান করার জন্য আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। প্রশাসন যদি তিনদিনের মধ্যে আবু তালেবের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা না নেয় তাহলে আমরা মানববন্ধন এবং জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবরে স্মারকলিপি দেবো।’
বিদ্যানিকেতন ট্রাস্টের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট আবদুস সালাম বলেন, ‘শিক্ষা কর্মকর্তা আবু তালেবের বিরুদ্ধে নারী শিক্ষক হয়রানি করার অনেক অভিযোগ রয়েছে। আমরা রোববার পর্যন্ত দেখবো প্রশাসন কী ব্যবস্থা নেয়। যদি তারা কোনো ব্যবস্থা না নেন তাহলে আমরা ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবক এবং স্কুল কর্তৃপক্ষ পরবর্তী কর্মসূচি গ্রহণ করবো।’
এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘নারী শিক্ষিকাকে লাঞ্ছনা করার বিষয়টি স্কুল কর্তৃপক্ষ আমাদের জানিয়েছে। বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখবো।’
ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কমকর্তা (ওসি) শেখ রিজাউল হক দিপু বলেন, ভুক্তভোগী এক নারী শিক্ষিকা থানায় এসে অভিযোগ করেছেন। এ বিষয়ে আমাদের তদন্ত চলমান রয়েছে।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আবু তালেবের মোবাইলে একাধিকবার কল করা হয়। তবে তিনি রিসিভ করেননি।(জাগো নিউজ)
আপনার মন্তব্য প্রদান করুন...