বিডি নিউজ আই, নিজস্ব সংবাদদাতা: নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান বলেছেন, রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের কারনে বৈশিক পরিস্থিতি অনেক খারাপ, এখন ডলারের দামও প্রায় ১১২ টাকা করে। তাই এই সময় সব কয়টা কাজে সরকারের হাত দেয়াটা উচিত হবে বরে আমি মনে করি না। আমি সাংবাদিক ভাইদের সাহায্য চাই, আমি কেবিনেট সেক্রেটারির সাথে আলোচনা করেছি। তিনি বলেছেন, ‘নো হাসপাতাল ও এবং ইউনিভার্সিটি সব যায়গায় সদর এরাকাতেই হয়। আর এটা সদরেই হবে।’ এখানে মুন্সিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদি, পুরান ঢাকা ও কুমিল্লার মানুষও এই সুবিধাটা পাবে। তখন আর ঢাকা মেডিকেলে নিযে যেতে হবে না। কেউ কেউ এটাকে এতো দুরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন যে যায়গায় গেলে আমাদের কোন উপকার হবে না, বরং ঢাকা মেডিকেল আমাদের সামনে থাকবে। আগে মানুস জমি একোয়ার করাইতে চাইতো না, এখন এটা হইয়া গেছে একটা ব্যবসা। তাই এইগুলিকে অন্য যায়গায় নেয়ার জন্য টানাটানি করছে। তাই আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ থাকবে যে, এই বিষয়টা নিয়ে আপনারা একটু ভয়েস রাইজ করেন। একটু চাপ দেন, কারন চাপ ছাড়া ফাইল মুভ করে না।
বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) বিকেলে জাতীয় বেসরকারী টেলিভিশন ‘নিউজ ২৪’ এর ৭ম প্রতিষ্টাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্টানে তিনি এসব কতা বলেন।
শামীম ওসমান বলেন, পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সত্য হচ্ছে মানুষকে একদিন চলে যেতে হবে। পৃথিবীর সব কিছুকেই চলে যেতে হবে। কারই অমরত্ব নেই, মৃত্যু আছেই। আমি জানি না আগামীকাল কী আছে। আমরা চেষ্টা করছি নারায়ণগঞ্জের সমস্যাগুলো সমাধান করতে। আপনারা জেনে খুব অবাক হবেন, আবার হয়তো কেউ কেউ একটু ক্ষিপ্তও হবেন, যে নারায়ণগঞ্জে একটি বিশ্ববিদ্যালয় করার জন্য আমি আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলাম। ঢাকার পাশে আমাদের নারায়ণগঞ্জ হওয়ার কারণে আমরা কিছুটা উপকৃত আবার কিছুটা অভিসপ্ত। মানুষ মনে করে ঢাকার কাছেই তো আছে ওরা ওদের প্রবলেম গুলো সমাধান করে নিবে। কিন্তু সেই জিনিসটার জন্য আমাদের অনেক দেরি হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, আমি কৃতজ্ঞতা জানাই জাতির পিতার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে। কারণ যখন আমি সরাসরি তার কাছে গিয়েছি ডিউ লেটার দিয়েছি। তখন এক মাসের মধ্যে আমি রেজাল্ট পেয়েছি। আল্লাহর রহমতে আপনার আমার দোয়ায়, আমাদের পূর্বপুরুষদের এবং বাবা মার দোয়ায় উনি নারায়ণগঞ্জে ‘বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়’ সেনশন করেছেন। আমরা প্রায় দেড় বছর আগে কিন্তু এই কাগজ পেয়ে গেছি। যেহেতু এটা আমি চিঠি দিয়েছিলাম সেহেতু এটার চিঠি আমার কাছেই এসেছে। ঠিক একই ভাবে আমরা একটা মেডিকেল কলেজ চেয়েছিলাম। কিন্তু যেটা আমি চেয়েছিলাম, তার চেয়ে অনেক বেশি পেয়েছি। কারণ আমরা চেয়েছিলাম ২য়’ ও ৩’ শয্যা এই দুইটাকে মিলিয়ে একটা ৫শ’শয্যা মেডিকেল কলেজ করতে। কিন্তু মাননিয় প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতার কন্যা, মনটা তো ওই রকমই বড় হিমালয়ের মতো। সে জন্য ওনি এই দুইটাকে আগের জায়গায় রেখেছেন এবং নতুন করে নারায়ণগঞ্জে একটা মেডিকেল করার নির্দেশ দিয়েছেন। সেটাও ৫শ’ সজ্যা বিসিষ্ট হবে। আর একটা সেনশনও হয়েছে। এই চিঠিও আমরা পেয়েছি।
শামীম ওসমান বলেন, বাংলাদেশ শেক কামাল আইটি ইন্সটিটিউট যেটা বাংলাদেশে ৩টি সবচেয়ে ব্যয় বহুল ইনিস্টিউটের মধ্যে একটা। ইতি মধ্যেই এটার বৃত্তি প্রস্তর স্থাপন হয়ে গেছে। এবং খুব দ্রুতই এটার কাজ শুরু হবে ইনশাআল্লাহ। এই ডিএনডি প্রজেক্ট ও আমাদের লিংক রোডের কাজগুলো হওয়ার পরে কিন্তু নারায়ণগঞ্জের চেহারা পাল্টে যাবে। লিংক রোডের কাজ হওয়ার পরে যদি আমরা ট্রাফিক কে কন্ট্রোল করতে পারি তা হলে আমার মনে হয় সচিবালয়ে যেতে আমাদের ১৪ থেকে ১৫ মিনিটের বেশি সময় লাগার কথা না। যদি শৃঙ্খলা মেইনটেইন করা যায়। আমাদের বিসিক শিল্প নগরী থেকে মুন্সিগঞ্জ পর্যন্ত একটা ব্রীজ পাশ করিয়েছি এবং সেই ব্রিজটা প্রায় ২৬ শ’ কোটি টাকা ব্যয়। ইতিমধ্যে জমি জরিপের কাজ শুরু হয়েছে। নাসিম ওসমান ব্রীজ অলরেডি হয়ে গেছে এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায় আছে। ঢাকা নারায়ণগঞ্জের পুরনো সড়ক ১শ; ১০ ফুট চওড়া হবে এবং পুরোটা আরসিসি হবে। আর খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়াম কে আরও আধুনিক করার জন্য আড়াইশ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। খুব শিগ্রই কাজ শুরু হবে।
শামীম ওসমান আরও বলেন, আমি আপনাদের সাহায্য চাই। আমি হয়তো ইমিডিয়েটলি নারায়ণগঞ্জের সব দলের মানুষকে ও সাধারণ মানুষকে ডাকবো।আমরা চিন্তা করবো যে আমরা নারায়ণগঞ্জের জন্য কি করতে পারি। আমরা প্রত্রেকটি এলাকার ৩৩জন করে ভালো মানুষের লিষ্ট করার চেষ্টা করতেছি। এই কাজটা হলো মাদক বন্ধ করতে। আমাদের চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে। সব যায়গাতেই বিবেধ আছে, তবে কিছু কিছু স্থানে আমার মনে হয় যে, আমাদের এক থাকা দরকার। আগামী প্রজন্ম যাতে বলতে পারে যে, ওনারা এই গাছ টা লাগিয়ে ছিলো আমরা ফল খাচ্ছি। আপনারা সত্য বলেন, সত্য দেখান, সত্য লেখেন। লেখতে না পারলে লেইখেন না, তবে মিথ্যা লেইখেন না। কিছু কিছু পত্রিকার স্ট্যান্ডার্ড আছে, আবার কিছু কিছু পত্রিকা দেখলে মনে হয় এগুলো পত্রিকার স্ট্যান্ডার্ড এ পরে না। এইসব দোকানদারী করা বন্ধ করা উচিত।
তিনি বলেন, আমি সকল কাজ করি এক মাত্র আল্লাহকে সন্তোষ্ট করার জন্য। আল্লাহ আমাদের দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন শুধু পরিক্ষা দেয়ার জন্য। আমি আপনাদের সকলের সাহায্য চাই এবং আপনাদের সকলকে সাহায্য করতে চাই। বয়স ষাট পার হয়ে গেছে, অনেক ক্ষেত্রেই ধৈয্য ধরি কিছু বলি না। যাই হোক মিলে মিশে থাকি, নারায়ণগঞ্জের জন্য কাজ করি; দেষের জন্য কাজ করি। আমরা আওয়ামী লীগের সবাই পারফেক্ট না। তবে শেখ হাসিনার মতো একজন মানুষ আমি আমার জিবনে ২য় দেখি নাই। আল্লাহ ওনাকে দীর্ঘায়ু দান করুক।
‘নিউজ ২৪’ এর জেলা প্রতিনিধি দিলিপ কুমারের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন- নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি চন্দনশীল, জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুস সালাম, নারায়ণগঞ্জ বার এসোসিয়েশনের সভাপতি হাসান ফেরদৌস জুয়েল, নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিপন সরকার শিখন প্রমুখ।
আপনার মন্তব্য প্রদান করুন...